নূর ভাই

ছবি: সংগৃহীত

নূর ভাইয়ের সঙ্গে বাবা প্রথম আলাপ করিয়ে দেন, ‘এ হলো তোমার নূর চাচা।’ সাল-টাল মনে নেই। সম্ভবত আমার বয়স চৌদ্দ-টোদ্দ হবে। নূর চাচা পরে অবশ্য আর চাচা থাকেননি, সহকর্মী হিসেবে কাজ শুরুর পর ভাই হয়ে গেলেন। নূর ভাইয়ের সঙ্গে আমার প্রথম নাটক ‘বরফ গলা নদী’। খুবই ইন্টারেস্টিং বিষয়, সেখানে আমরা জুটি হয়েছিলাম। বিটিভিতে এটাই আমার প্রথম বড়দের নাটক। নূর ভাই সেখানে একটা ফটোগ্রাফারের চরিত্র করেছিলেন। পরে তাঁর সঙ্গে অনেক অনেক কাজ করেছি। ‘কোথাও কেউ নেই’, ‘অয়োময়’, ‘আজ রবিবার’-এর মতো মাইলফলক ছোঁয়া ধারাবাহিক তো আছেই, আছে প্রচুর একক নাটক। তখন বিটিভিতে ‘এ মাসের নাটক’ হতো, সেখানে প্রচুর ভালো ভালো কাজ আছে আমাদের। যেমন বলা যায় ‘কুল নাই কিনার নাই’-এর কথা। আমি, আফজাল (হোসেন) আর নূর ভাই ছিলাম। নূর ভাইয়ের সঙ্গে আমার খুবই পছন্দের নাটক এটা। এই নাটকে আমার সব দৃশ্যই ছিল নূর ভাইয়ের সঙ্গে! এ ছাড়া ‘আয়নায় বন্ধুর মুখ’-এর কথাও বলা যায়। এখনো অনেক মানুষ ইউটিউবে আগের নাটক দেখে, নিয়মিতই তাদের প্রতিক্রিয়া পাই। ‘কোথাও কেউ নেই’ নিয়ে এখনো মানুষ কথা বলে। ফোন করে বলে, তখন এমন কাজ কী করে সম্ভব ছিল! সম্ভব ছিল কারণ কনটেন্ট ভালো ছিল, অভিনেতা ভালো এবং অভিনয়ে সবাই সিরিয়াস ছিল। যখন আমি, নূর ভাই ‘কোথাও কেউ নেই’ বা ‘অয়োময়’ করছি, তখন শুধু ওটাই করছি, অন্য কোনো কাজ নয়।
নূর ভাইয়ের সঙ্গে আমার সম্পর্কটা খুবই ইন্টারেস্টিং। শুরুতে চাচা, এরপর ভাই, এখন আমি আর নূর ভাই একই অফিসে বসি—বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ। আমরা দুজনই সংসদ সদস্য। একসঙ্গে দেশের জন্য কাজ করছি।
নূর ভাইয়ের অভিনয় মূল্যায়ন করবে দর্শক। আমি বলতে পারি মানুষ নূর ভাইকে নিয়ে—সদাচারী, মিষ্টভাষী একজন মানুষ। তাঁকে কখনো খুব রেগে যেতে দেখিনি। ভীষণ সহযোগিতাপ্রবণ মানুষ। ৭৫তম জন্মদিনে নূর ভাইকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা, শুভ কামনা। উনার সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করছি। উনাকে পর্দায় আরো দেখতে চাই, উনার সঙ্গে আবারও কাজ করতে চাই।
- সুবর্ণা মুস্তাফা

(লেখাটি ২০২১ সালের ২৮ অক্টোবর দৈনিক কালের কন্ঠে প্রকাশিত)



Previous Post Next Post

نموذج الاتصال