অপরিকল্পিত নগরায়ন, অনিয়ন্ত্রিত উন্নয়ন, ইটভাটার কালো ধোঁয়া, যত্রতত্র শিল্প করাখানা গড়ে ওঠা, প্রকৃতিক বন ধ্বংস ও নিষিদ্ধ কয়লা তৈরির কারখানা বায়ুদূষণ বাড়াচ্ছে

টাঙ্গাইলে বায়ুদূষণ বেড়েছে/ঢাকা ট্রিবিউন
মেগা প্রকল্পসহ নানা ধরনের অবকাঠামোগত নির্মাণকাজের ধূলাবালি এবং অনিয়ন্ত্রিত কলকারখানার বিষাক্ত কালো ধোঁয়ায় টাঙ্গাইলে বাড়ছে বায়ুদূষণ। জেলায় বাড়ছে বিভিন্ন রোগের সংক্রমণ বেড়ে চলছে।
সম্প্রতি স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটির বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস) টাঙ্গাইলের বায়ুর ওপর গবেষণা পরিচালনা করে। এতে জানা গেছে, অপরিকল্পিত নগরায়ন, অনিয়ন্ত্রিত উন্নয়ন, ইটভাটার কালো ধোঁয়া, যত্রতত্র শিল্প করাখানা গড়ে ওঠায় জেলার বায়ুদূষণের মাত্রা বাড়ছে। এছাড়া প্রকৃতিক বন ধ্বংস ও নিষিদ্ধ কয়লা তৈরির কারখানা বায়ুদূষণে ব্যাপক প্রভাব ফেলছে।
চিকিৎসকরা বলছেন, বায়ুদূষণের ফলে টাঙ্গাইলে স্বাস্থ্য ঝুঁকি বেড়েছে। কার্বন-ডাই-অক্সাইড, কার্বন-মনো অক্সাইড, নাইট্রাস অক্সাইড, ক্লোরোফ্লোরো কার্বনসহ বিভিন্ন কনা বাতাসের সঙ্গে মিশে মানুষের দেহে প্রবেশ করছে। বিষাক্ত ও ক্ষতিকর পদার্থ শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে ফুসফুসে প্রবেশ করছে। দীর্ঘদিন ক্ষতিকর পদার্থ শরীরে প্রবেশ করায় ফুসফুস, কিডনি, লিভার, হৃৎপিণ্ডের রোগসহ নানা ধরনের রোগের প্রার্দুভাব বেড়েছে। এছাড়া গর্ভপাত, জন্মগত ত্রুটি, শিশুর স্নায়ুতন্ত্রের বিকাশে বায়ুদূষণ বড় ধরনের প্রভাব ফেলছে।
টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের সিনিয়র কনসালট্যান্ট ডা. সাইফুল ইসলাম বলেন, “গত কয়েক বছর ধরে টাঙ্গাইলে বায়ুদূষণজনিত বিভিন্ন রোগের সংক্রমণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফুসফুস, কিডনি, লিভার, হৃৎপিণ্ডসহ বিভিন্ন ধরনের রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন বাসিন্দারা।”
জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক জমির উদ্দিন বলেন, “টাঙ্গাইলে বৃহৎ প্রাকৃতিক বন থাকার পরেও বায়ুদূষণের মাত্রা আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। অপরিকল্পিত বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প, গোড়াই শিল্পাঞ্চলে অপরিকল্পিত কলকারখানা, ফিটনেসবিহীন গাড়ির কালোধোঁয়া, অবৈধ ইটভাটা ও অবৈধ কয়লা তৈরির কারখানার কারণে বায়ুদূষণ বাড়ছে। আমরা স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতায় অবৈধ ইটভাটা ও অবৈধ কয়লা তৈরির কারখানা বন্ধ করে দিচ্ছি।”
জেলা প্রশাসক কায়ছারুল ইসলাম বলেন, “বায়ুদূষণ বৃদ্ধির কারণগুলো ইতিমধ্যে চিহ্নিত করা হচ্ছে। দূষণ কমাতে আমরা কাজ শুরু করেছি। আশা করছি দূষণের মাত্রা কমিয়ে আনা সম্ভব হবে।”
প্রসঙ্গত, রাজধানী ঢাকা প্রায়ই বিশ্বের শীর্ষ দূষিত বায়ুর শহরের তালিকায় থাকে। এই দূষণের হার তুলনামূলক দক্ষিণ এশিয়ায় বেশি। তীব্র বায়ু দূষণের কারণে দক্ষিণ এশিয়ার বাসিন্দাদের প্রত্যাশিত গড় আয়ু কমছে। এতে স্বাস্থ্যের ওপর বায়ু দূষণের ক্রমবর্ধমান ঝুঁকির বিষয়টি উঠে এসেছে।
সম্প্রতি প্রকাশিত শিকাগো ইউনিভার্সিটি অব এনার্জি পলিসি ইনস্টিটিউটের এয়ার কোয়ালিটি লাইফ ইনডেক্সে বলা হয়, বিশ্বব্যাপী বায়ু দূষণের কারণে সবচেয়ে বেশি আয়ু হারাচ্ছেন দক্ষিণ এশিয়ার বাসিন্দারা। বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত দেশ বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল ও পাকিস্তানের বাসিন্দারা বেশি ভুক্তভোগী হচ্ছেন।
ওই গবেষণায় বলা হয়, বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত দেশ বাংলাদেশে প্রত্যেক মানুষ জীবন থেকে গড়ে ৬ বছর ৮ মাস হারিয়ে যাচ্ছে বায়ু দূষণের কারণে। যুক্তরাষ্ট্রে এই গড় ৩ বছর ৬ মাস।
শিকাগো ইউনিভার্সিটির প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৩ সাল থেকে বিশ্বের দূষণের প্রায় ৫৯% বৃদ্ধির জন্য ভারত দায়ী। বিপজ্জনক বায়ু দেশটির আরও কিছু দূষিত অঞ্চলে আয়ুষ্কাল আরও হ্রাসের হুমকি দিচ্ছে। বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত ও ঘনবসতিপূর্ণ নয়াদিল্লি শহরে গড় আয়ু ১০ বছরেরও বেশি কমে গেছে।

টাঙ্গাইলে বায়ুদূষণ বেড়েছে/ঢাকা ট্রিবিউন
মেগা প্রকল্পসহ নানা ধরনের অবকাঠামোগত নির্মাণকাজের ধূলাবালি এবং অনিয়ন্ত্রিত কলকারখানার বিষাক্ত কালো ধোঁয়ায় টাঙ্গাইলে বাড়ছে বায়ুদূষণ। জেলায় বাড়ছে বিভিন্ন রোগের সংক্রমণ বেড়ে চলছে।
সম্প্রতি স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটির বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস) টাঙ্গাইলের বায়ুর ওপর গবেষণা পরিচালনা করে। এতে জানা গেছে, অপরিকল্পিত নগরায়ন, অনিয়ন্ত্রিত উন্নয়ন, ইটভাটার কালো ধোঁয়া, যত্রতত্র শিল্প করাখানা গড়ে ওঠায় জেলার বায়ুদূষণের মাত্রা বাড়ছে। এছাড়া প্রকৃতিক বন ধ্বংস ও নিষিদ্ধ কয়লা তৈরির কারখানা বায়ুদূষণে ব্যাপক প্রভাব ফেলছে।
চিকিৎসকরা বলছেন, বায়ুদূষণের ফলে টাঙ্গাইলে স্বাস্থ্য ঝুঁকি বেড়েছে। কার্বন-ডাই-অক্সাইড, কার্বন-মনো অক্সাইড, নাইট্রাস অক্সাইড, ক্লোরোফ্লোরো কার্বনসহ বিভিন্ন কনা বাতাসের সঙ্গে মিশে মানুষের দেহে প্রবেশ করছে। বিষাক্ত ও ক্ষতিকর পদার্থ শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে ফুসফুসে প্রবেশ করছে। দীর্ঘদিন ক্ষতিকর পদার্থ শরীরে প্রবেশ করায় ফুসফুস, কিডনি, লিভার, হৃৎপিণ্ডের রোগসহ নানা ধরনের রোগের প্রার্দুভাব বেড়েছে। এছাড়া গর্ভপাত, জন্মগত ত্রুটি, শিশুর স্নায়ুতন্ত্রের বিকাশে বায়ুদূষণ বড় ধরনের প্রভাব ফেলছে।
টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের সিনিয়র কনসালট্যান্ট ডা. সাইফুল ইসলাম বলেন, “গত কয়েক বছর ধরে টাঙ্গাইলে বায়ুদূষণজনিত বিভিন্ন রোগের সংক্রমণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফুসফুস, কিডনি, লিভার, হৃৎপিণ্ডসহ বিভিন্ন ধরনের রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন বাসিন্দারা।”
জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক জমির উদ্দিন বলেন, “টাঙ্গাইলে বৃহৎ প্রাকৃতিক বন থাকার পরেও বায়ুদূষণের মাত্রা আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। অপরিকল্পিত বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প, গোড়াই শিল্পাঞ্চলে অপরিকল্পিত কলকারখানা, ফিটনেসবিহীন গাড়ির কালোধোঁয়া, অবৈধ ইটভাটা ও অবৈধ কয়লা তৈরির কারখানার কারণে বায়ুদূষণ বাড়ছে। আমরা স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতায় অবৈধ ইটভাটা ও অবৈধ কয়লা তৈরির কারখানা বন্ধ করে দিচ্ছি।”
জেলা প্রশাসক কায়ছারুল ইসলাম বলেন, “বায়ুদূষণ বৃদ্ধির কারণগুলো ইতিমধ্যে চিহ্নিত করা হচ্ছে। দূষণ কমাতে আমরা কাজ শুরু করেছি। আশা করছি দূষণের মাত্রা কমিয়ে আনা সম্ভব হবে।”
প্রসঙ্গত, রাজধানী ঢাকা প্রায়ই বিশ্বের শীর্ষ দূষিত বায়ুর শহরের তালিকায় থাকে। এই দূষণের হার তুলনামূলক দক্ষিণ এশিয়ায় বেশি। তীব্র বায়ু দূষণের কারণে দক্ষিণ এশিয়ার বাসিন্দাদের প্রত্যাশিত গড় আয়ু কমছে। এতে স্বাস্থ্যের ওপর বায়ু দূষণের ক্রমবর্ধমান ঝুঁকির বিষয়টি উঠে এসেছে।
সম্প্রতি প্রকাশিত শিকাগো ইউনিভার্সিটি অব এনার্জি পলিসি ইনস্টিটিউটের এয়ার কোয়ালিটি লাইফ ইনডেক্সে বলা হয়, বিশ্বব্যাপী বায়ু দূষণের কারণে সবচেয়ে বেশি আয়ু হারাচ্ছেন দক্ষিণ এশিয়ার বাসিন্দারা। বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত দেশ বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল ও পাকিস্তানের বাসিন্দারা বেশি ভুক্তভোগী হচ্ছেন।
ওই গবেষণায় বলা হয়, বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত দেশ বাংলাদেশে প্রত্যেক মানুষ জীবন থেকে গড়ে ৬ বছর ৮ মাস হারিয়ে যাচ্ছে বায়ু দূষণের কারণে। যুক্তরাষ্ট্রে এই গড় ৩ বছর ৬ মাস।
শিকাগো ইউনিভার্সিটির প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৩ সাল থেকে বিশ্বের দূষণের প্রায় ৫৯% বৃদ্ধির জন্য ভারত দায়ী। বিপজ্জনক বায়ু দেশটির আরও কিছু দূষিত অঞ্চলে আয়ুষ্কাল আরও হ্রাসের হুমকি দিচ্ছে। বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত ও ঘনবসতিপূর্ণ নয়াদিল্লি শহরে গড় আয়ু ১০ বছরেরও বেশি কমে গেছে।
সূত্র: ঢাকা ট্রিবিউন
Tags
daily news